‘ছুটি’ গল্পে ফটিকের চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।
👉🏻 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ও লেখক। তাঁর লেখা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আজও পাঠকদের মনে স্পর্শ করে। ‘ছুটি’ গল্পটি তাঁর লেখা একটি জনপ্রিয় গল্প, যেখানে ফটিক নামে এক কিশোরের জীবন ও অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে।
ফটিক গল্পের মূল চরিত্র। সে একজন দুষ্টুমিপ্রিয়, সরল মনের গ্রামের ছেলে। তার মধ্যে শৈশবের স্বাভাবিক উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। সে তার বন্ধুদের সাথে নানা ধরনের খেলাধুলা করে, প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ায়। ফটিকের মধ্যে শিশুশুলভ মন থাকলেও, তার মধ্যে একটা দৃঢ়তাও রয়েছে।
১) শিশুশুলভ মন :– ফটিক একজন সরল, নির্মল মনের ছেলে। সে খুব সহজে খুশি হয় আর খুব সহজে কষ্ট পায়। তার মনটা খোলা, কোনো কথা মনে রাখে না। কাহিনী শুরুতে সমস্ত বালকদের মধ্যে ফটিক নেতৃত্ব দিয়ে বিভিন্ন খেলা খেলছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকাণ্ড শাল কাঠের গুড়ি গড়িয়ে খেলা। ফটিক খেলার জন্য যে সমস্ত পরিকল্পনা করতো সবেতেই সকল বালক অনুমোদন দিত।
২) প্রকৃতির প্রতি প্রেম :– ফটিক প্রকৃতির প্রতি অসীম ভালোবাসা পোষণ করে। সে নদীর ধারে খেলাধুলা করে, গাছের ছায়ায় বসে থাকে। কখনো কখনো নদীর তীর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটে। এইভাবেই প্রকৃতির সঙ্গে তার এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
৩) সরলতা :– ফটিকের মধ্যে সরলতা রয়েছে। সে যা ভাবে তাই বলে আর করে। তার ছোট ভাই মাখনলাল যখন তাদের খেলার শালকাঠের গুড়ির উপর উঠে বসে, তখন অনেক বলার সত্ত্বেও ফটিকের ভাই সেই গুঁড়ির উপর থেকে নামে না। তাই তখন চিন্তা ভাবনা করে তার ভাইকে শুদ্ধ সেই শাল কাঠের গুড়িটি গড়িয়ে খেলবে । এর থেকে বোঝা যায় তার সরলতা।
৪) অভিমান ও রাগ :– ফটিক কলকাতায় মামার বাড়িতে এসে অনেক বার বই হারিয়ে ফেলে, স্কুলে না পড়া করার জন্য মাস্টারমশায়ের কাছে মার খায়, এমনকি মামীর কাছে শত ইচ্ছা প্রকাশ করার সত্ত্বেও সে সমস্ত ইচ্ছা প্রত্যাখ্যাত হয়। এই অভিমানেই সে নিজেকে মাটির সহিত মিশাইয়া ফেলে।
৫) সহ্যক্ষমতা :– ফটিকের মধ্যে সহ্যক্ষমতাও রয়েছে। ফটিকের বাবা তার অনেক ছোটবেলাতেই মারা যায়। তাই ফটিক বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার মতো ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছিল। সে তার মামির কঠোর আচরণ সত্ত্বেও, তার কাছে থেকে শিখতে চেষ্টা করে, তার মামি যে কাজ বলতো ফটিক সে কাজ করত, সে কখনও পিছপা হয়নি। কিন্তু তার সত্বেও ফটিক তার মামিমার মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
গ্রামের জীবন থেকে কলকাতায় শহরের জীবনে এসে ফটিক বড়ই একলা হয়ে যায় এবং কিছুদিন সেখানে থাকার পরে তার মায়ের কাছে যাওয়ার আবেদন করে তার মামার কাছে। তার মামা বলে কিছুদিন পরে তাকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবে, কিন্তু তার আগেই ফটিক নিরুদ্দেশ হয়ে যায় এবং তারপরে গল্পের শেষে ফটিকের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কথা সরাসরি না বলা থাকলেও , গল্পের শেষ কথাটি থেকে এটা বুঝে নিতে হবে।
‘ছুটি’ গল্পে মামার বাড়িতে গিয়ে ফটিকের যে দুরবস্থা হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো।
👉🏻 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের স্বর্ণযুগের একজন অসাধারণ কবি, ঔপন্যাসিক আর দার্শনিক। তাঁর লেখা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আমাদের মনকে ছুঁয়ে যায়। তার লেখা সমস্ত ছোট গল্প গুলির মধ্যে অন্যতম গল্প ছুটি আমাদের পাঠ্য। এই গল্পের মূল চরিত্র ফটিক। একটা সরল, প্রকৃতিপ্রেমী ছেলে। গ্রামের প্রকৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠা ফটিক তার মামার সঙ্গে কলকাতায় মামার বাড়িতে গিয়ে সে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে পারে না। শহরের জীবন তার জন্য অচেনা।
প্রথমত, ফটিক মামার বাড়িতে গিয়ে পৌঁছালে তার মামী কিছুটা অসন্তোষ বোধ করে। কারণ তার মামির তিন সন্তান রয়েছে। তার সাথে ১৩-১৪ বছরের এই ফটিককে সামলানো তার কাছে অত্যন্ত দূরহ কাজ হয়ে উঠে। গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে শহরের কোলাহলপূর্ণ জীবনে এসে ফটিক হারিয়ে যায়। সে তার আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। মামার বাড়িতে তার কোনো সঙ্গী নেই। সে একা একা সময় কাটাতে বাধ্য হয়। এই একাকিত্ব তাকে মানসিকভাবে বিভ্রান্ত করে তোলে। তার মামার ছেলেরা তাকে কোন সময় দিত না। তাছাড়া ফটিক তার মামির নির্দেশ মতো সমস্ত কাজকর্ম করার সত্ত্বেও সে নবীর মন জয় করতে পারেনি ভাবির কাছে সে ছিল উপেক্ষার পাত্র। ফটিকের পড়ার বই ফটিক বারবার হারিয়ে ফেলে স্কুলে না পড়া করার জন্য শিক্ষক মহাশয়ের কাছেই বকা খায়। তারপরে বাড়ি ফিরে মামির কাছে বই কিনে দেওয়ার আবদার করলে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়। তারপরে ফটিক নিজেই মনে মনে ভাবে পরের পয়সা নষ্ট না করায় ভালো। বিভিন্ন যন্ত্রণার কষ্ট তার মনের মধ্যে আঘাত করে। নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারায় ফটিক হঠাৎ একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে যায় এবং তার পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। জ্বর আসে, শরীর খারাপ হয়ে যায় এবং সেই প্রলাপ বকতে থাকে। তার মায়ের কথা মনে করতে থাকে। ফটিকের অসুস্থতা দেখে তার মামি তার মামাকে বলেন ফটিককে তার বাড়ি পাঠিয়ে দিতে। পর ফটিকের মামা বিষ নম্বর বাবু ফটিকের মাকে ফটিক তার মায়ের উপস্থিতিতে বলে ওঠে– “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।” এই কথাটি বলেই গল্পের সমাপ্তি হয়।
এক কথায় বলতে গেলে, ফটিক মামার বাড়িতে গিয়ে একদিকে তো মাকে মিস করে, অন্যদিকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে চায়। এই দ্বন্দ্ব তাকে মানসিকভাবে কষ্ট দেয়। ফটিকের এই দুরবস্থার কারণ হল তার পরিবেশের পরিবর্তন। সে তার পরিচিত পরিবেশ থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে। নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ, নতুন অভিজ্ঞতা তার জন্য অনেক বড় পরিবর্তন।
‘ছুটি’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।
👉🏻 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্পটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন। গল্পটি শুধুমাত্র একটি শিশু জীবনের কাহিনীই নয়, বরং জীবন, মৃত্যু, মানব সম্পর্ক এবং সামাজিক বাস্তবতার এক গভীর অনুসন্ধান। গল্পের নামকরণও এর বিষয়বস্তুর সঙ্গে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জড়িত।
গল্পের প্রধান চরিত্র ফটিক :– গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিক। সে এক সরল, প্রকৃতিপ্রেমী শিশু। তার শৈশবের খেলাধূলা, বন্ধুত্ব এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গল্পটি এগিয়ে চলে। ফটিকের বাবা মারা যাওয়ার পর তার মা তার ভাই মাখনকে বেশি ভালোবাসে। এই পক্ষপাতিত্ব ফটিককে মানসিকভাবে বিচলিত করে।
কলকাতা যাত্রা এবং তার পরিণতি :– ফটিককে তার মামার বাড়ি কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। শহরের জীবন ফটিকের জন্য অচেনা এবং অস্বস্তিকর। সে মামির আদেশে সব কাজ করেও তাদের মন জয় করতে পারে না। ফটিকের এই মানসিক যন্ত্রণা ধীরে ধীরে তীব্র হয়ে ওঠে। একদিন সে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পরে তাকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। তার শেষ কথা, “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা,এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি,” গল্পটিকে এক বিষাদময় মাত্রা দেয়।
গল্পের নামকরণের সার্থকতা :— গল্পের মূল বিষয়বস্তু হলো ফটিকের মানসিক যন্ত্রণা এবং তার মৃত্যু। এই বিষয়বস্তুর সঙ্গে ছুটি শব্দটি অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ। সাধারণত ছুটি শব্দটি দিয়ে আমরা অবকাশ বা বিধিবদ্ধ কাজ থেকে মুক্তি বুঝি। কিন্তু এই গল্পে ছুটি শব্দটির ব্যবহার আরও গভীর অর্থ বহন করে। ফটিকের বাড়ি ফিরার আকাঙ্ক্ষা যে ছুটি, সেটি তার জীবন থেকে ছুটি নেওয়ার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে ছুটি শব্দটি মৃত্যুর একটি রূপক। গল্পের শেষে ফটিকের মুখে ছুটি শব্দটি ব্যবহার করে রবীন্দ্রনাথ পাঠককে গভীরভাবে চিন্তিত করে তুলেছেন।
পরিশেষে বলতে হয়, ‘ছুটি’ গল্পটি শুধুমাত্র একটি শিশু জীবনের কাহিনীই নয়, বরং জীবন, মৃত্যু এবং মানব সম্পর্কের এক গভীর অনুসন্ধান। গল্পের নামকরণ এর
বিষয়বস্তুর সঙ্গে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জড়িত। ছুটি শব্দের দ্বিধারথকতা এবং গল্পের মূল বিষয়বস্তুর সঙ্গে এর সামঞ্জস্য গল্পটিকে আরও গভীর করে তুলেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গল্পটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য রত্ন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্পে ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবুর চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
👉🏻 বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ মণি। তাঁর লেখা গল্প, উপন্যাস, কবিতা আমাদের মনকে স্পর্শ করে। ‘ছুটি’ গল্পটিও তাঁর অন্যতম জনপ্রিয় ছোট গল্প। এই গল্পে ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবু একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তার চরিত্রের মধ্যে রয়েছে কর্তব্য পালন, দায়িত্বশীল, সম্পর্কের টান প্রভৃতি। তাঁর চরিত্র গল্পটিকে আরও গভীর করেছে এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতা :– বিশ্বম্ভর বাবু যখন ফটিকদের বাড়িতে আসেন তিনি ফটিকের দুঃখ দেখে তিনি খুবই মর্মাহত হয়েছিলেন। তিনি ফটিকের জন্য যা করতে পারতেন তা-ই করেছিলেন। ফটিকের মামা তাকে নিয়ে মামার বাড়ি কলকাতাতে চলে আসেন এবং সেখানেই তাকে স্কুলে ভর্তি করেন এবং তার দায়িত্ব ভার নেন।
ভালবাসা ও স্নেহ :– বিশ্বম্ভরবাবু ফটিককে খুব ভালবাসতেন। তিনি ফটিককে নানা উপহার দিতেন, তার পড়াশোনার খরচ বহন করতেন। তাঁর এই ভালবাসা ফটিকের উপর ছিল একটা বড় প্রভাব। এছাড়াও বিশ্বম্ভর বাবুর তার বোনের প্রতি এক অসীম ভালোবাসা ছিল। এই কারণেই তিনি প্রথমে কাজ থেকে ফিরে তার বোনের সঙ্গে দেখা করতে আসে। এ যেন বিশ্বম্ভর বাবু আর তার বোনের রক্তের সম্পর্কের বন্ধনকে আরও নিবিড় করে তুলেছে।
সরলতা :– তিনি খুব সরল প্রকৃতির একজন মানুষ ছিলেন। জীবনের সামান্য সুখেই তিনি খুশি হয়ে যেতেন। তিনি পশ্চিমের কাজ থেকে ফিরে প্রথমেই বোনের বাড়িতে এসে বোনের সঙ্গে দেখা করেন। তারপরে বোনের কষ্ট হচ্ছে দেখে ফটিকে নিয়ে মামা বাড়ি কলকাতায় চলে আসেন। বিশ্বম্ভর বাবু একটু দুর্বল চরিত্রের ছিলেন। তিনি নিজের স্ত্রীর কাছে নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারতেন না।
সহানুভূতি ও বিবেক :– ফটিক নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ার পরে যখন পুলিশের গাড়িতে করে ফটিকে ফিরিয়ে আনা হয়, তখন ফটিকের মামিমা বলেন ফটিকে তার বাড়ি পাঠিয়ে দিতে কিন্তু সেই কথা শুনে ফটিকের মামা বিশ্বম্ভর বাবু তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং একজন সন্তানের বাবা মায়ের মতনই তিনি ফটিকের অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ডাকেন এবং সারারাত ফটিকের খেয়াল রাখেন।
পরিশেষে বলতে হয় , বিশ্বম্ভর বাবুর চরিত্র গল্পটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর মাধ্যমে লেখক আমাদের দেখিয়েছেন যে, ভালবাসা এবং সহানুভূতি মানুষকে কতটা সুখী করতে পারে। আবার, দুর্বলতা এবং নিজের মতামত প্রকাশ করতে না পারার কারণে মানুষ কতটা কষ্ট পায়, তাও আমরা এই চরিত্রের মাধ্যমে বুঝতে পারি।
“মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।” –কোন প্রসঙ্গে এমন উক্তি? এই উক্তির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
👉🏻 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ মণি। তার লেখা প্রত্যেকটিই জীবনের গভীর সত্যকে তুলে ধরে। ‘ছুটি’ গল্পটিও তার মধ্যে একটি। এই গল্পে ফটিক নামের এক বালকের জীবন ও মৃত্যুর সংগ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে।
উক্তির প্রসঙ্গ :– গল্পের শেষ প্রান্তে ফটিক অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর কাছে চলে যাচ্ছে। জ্বরের প্রলাপে সে তার মাকে ডাকে এবং বলে, “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।” এই উক্তিটি ফটিকের অবচেতন মনে যে ছোট্ট বাড়ির প্রতি আকুলতা ছিল, তা প্রকাশ করে। মৃত্যুকে সে ছুটি হিসেবে দেখছে, বাড়ি ফেরার পথ হিসেবে।
উক্তির তাৎপর্য :–
শৈশবের নিরাপত্তার সন্ধান : ফটিকের এই উক্তিটি শৈশবের নিরাপত্তা ও মায়ের কোলে ফিরে যাওয়ার এক তীব্র আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও তার মন মায়ের কাছে ছুটে যায়।
জীবনের অস্থায়িত্ব : এই উক্তি জীবনের অস্থায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সবাইকে একদিন মৃত্যুকে স্বীকার করতে হয়।
মৃত্যুর প্রতি একটি অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গি : সাধারণত মৃত্যুকে ভয়ঙ্কর হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু ফটিকের ক্ষেত্রে মৃত্যু হলো এক শান্তির অবস্থা, বাড়ি ফেরার পথ।
শৈশবের স্বপ্ন : ফটিকের এই উক্তি তার শৈশবের স্বপ্নের কথা মনে করিয়ে দেয়। সে হয়তো ছোটবেলায় অনেকবার তার মাকে বলেছিল, “মা, আমি বাড়ি যাব।” মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সে সেই স্বপ্নকেই বাস্তব করে তুলতে চায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছুটি’ গল্পটি শুধু একটি বালকের মৃত্যুর গল্প নয়। এটি জীবন, মৃত্যু, শৈশব, মায়ের স্নেহ, মানুষের আবেগের এক সুন্দর চিত্র। ফটিকের এই উক্তিটি গল্পটিকে আরও গভীর করে তুলেছে এবং পাঠকদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম Study গ্রুপে যুক্ত হোন -
Give the pdf format